কালপুরুষ - বাংলাদেশি জনরা ফিকশনে এক নতুন বেঞ্চমার্ক
- Shakib Chowdhury
- May 25, 2024
- 2 min read
। রেটিং - দশে ৯ ।

আমি সালজার রহমান কে চিনি অ্যানিমেশন এবং মিউজিক ভিডিও ডিরেক্টর হিসাবে। যখন শুনলাম সালজার সম্পূর্ণ লাইভ অ্যাকশন সিরিজ বানাচ্ছে তখন ভাবলাম ছেলেটা অনেক স্মার্ট, আশা করি খুব একটা বাজে হবে না।
বাজে হয় নি। হয়েছে বাংলাদেশের জনরা ফিকশনে এক নতুন বেঞ্চমার্ক।
দ্যা গুড - একটা ক্রাইম থ্রিলারে দরকার টান টান উত্তেজনা মেশানো ভালো গল্প। দরকার প্রতিটা পর্বের শেষে একটা ক্লিফ হ্যাঙ্গার। এর সাথে চটপটে সংলাপ, দারুণ অভিনয়। সালজার চিত্রলেখক এবং ডিরেক্টর হিসাবে এ সবই করেছেন। কিন্তু তিনি এখানেই থেমে থাকেন নি। কঠোর পরিশ্রম করে সম্পূর্ণ প্রডাকশনে মনোযোগ দিয়েছেন। তাই সিরিজটা দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে। ক্যামেরার কাজ, এডিটিং, কালার কারেকশন হয়েছে চমৎকার। আর্ট ডিরেকশন হয়েছে কড়কড়া। আবহ সঙ্গীত হয়েছে গল্পের ঐকতানে। এবং আমার প্রতিনিয়ত নালিশ “ফোলি সাউন্ড কোথায়” এখানে প্রযোজ্য নয়।
গল্পটা অনেক সাহসী। সালজার রহমান আপনাকে বয়ে নিয়ে যাবে এ জগতের জঘন্যতম এক খুনের কাহিনি থেকে একটা বিজ্ঞান কল্পজগতের কাহিনিতে। কিন্তু যেহেতু সে অনেক যত্ন সহকারে আপনাকে নিয়ে যাবে তাই কোন ধাক্কা খাবেন না। এই কাজটা খুবই কঠিন। এ ধরনের গল্পে সাধারণত ধাক্কা খেয়ে আমরা গল্পের বাইরে চলে আসি। সেটা আমাদের দেশী গল্প হোক অথবা হোক হলিউডি। কিন্তু সালজারের দক্ষ লেখা ও ডিরেকশনের কারণে এই স্থানান্তর হয়েছে খুবই স্বচ্ছন্দে।
প্রধান চরিত্র হিসেবে এফ এস নায়িম প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। কিছু কিছু সময় উনার অভিনয় একটু পিছলে গেছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে তিনি ভালো করেছেন। এটা খুব দরকার ছিল কারণ তার অভিনয় ভালো না হলে এই গল্প আমি বিশ্বাস করতে পারতাম না। যদিও তানজিকা আমিন বেশি সময় ধরে গল্পে ছিলেন না, যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ স্ক্রিন আলোকিত করে রেখেছেন। এখানে সালজারকে একটা বিশেষ ধন্যবাদ দিতেই হবে। নাইম ও তানজিকার বৈবাহিক সম্পর্কের মিষ্টি আন্তরিকতা আমার খুব ভালো লেগেছে। জামাই বউ সারাক্ষণ ঝগড়া করছে ইজ সো লেইম। চঞ্চল চৌধুরী সাহেব ছিলেন চুম্মা। পরী চরিত্রের সাথে তার সম্পর্কটা খুব চমৎকার। নায়িমের সহযোগী পুলিশ অফিসার দারুণ কাজ করেছেন। আসলে এই সিরিজে সবাই খুব ভালো কাজ করেছেন।
দ্যা ব্যাড – একদম শেষের দিকে এসে কাহিনীর মান একটু পড়ে যায়। নায়িম যখন খুনের ঘটনাস্থলে ফিরে যান, তখন তার অভিনয় এবং সালজারের ডিরেকশন দুটোই একটু দুর্বল। আশা করি নায়িম ও সালজার এখান থেকে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নিবেন। এটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা। এছাড়া বলব কিছু কিছু সময় হঠাৎ বাজে সংলাপ কানে লাগে। কিন্তু সেটা খুবই অল্প।
দ্যা অসহ্য – অসহ্য লাগার প্রশ্নই আসে না।
দ্যা শেষ কথা – প্রচণ্ড দক্ষতা ও অ্যাটেনশন টু ডিটেইল দিয়ে সালজার রহমান এই সিরিজ বানিয়েছেন। আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনিও দেখে নিন। মহা সমারোহে চলছে চরকিতে।
Comments